পিরোজপুর রিভারভিউ ইকোপার্ক
পিরোজপুর রিভারভিউ ইকোপার্ক বাংলাদেশের একটি দর্শনীয় স্থান, যা পিরোজপুরের অন্তর্গত। পিরোজপুর ডিসি পার্ক নামেও পরিচিত এই পর্যটনকেন্দ্রটি পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর তীরে অবস্থিত। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৮৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণে এটির অবস্থান।
বিশেষত্ব
[সম্পাদনা]পিরোজপুর জেলা সদর হতে ২.৫ কিলোমিটার দূরে নামাজপুর গ্রামে বলেশ্বর নদীর তীরে এই ইকোপার্কটি অবস্থিত। ২০০৭ সালে তত্কালীন জেলা প্রশাসক মনছুর রাজা চৌধুরী এই পার্কটি স্থাপনের উদ্যোগ নেন, যা ২০১০ সালে বাস্তবায়ন করা হয় এবং ২০১৪ সালে পিরোজপুর জেলা পরিষদের ওপর এর সার্বিক দায়িত্ব অর্পিত হয়। ২০১৫ সালে বনবিভাগ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে পার্কটির উন্নয়ন করে।
বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের অর্থায়নে ২.৫৪ হেক্টর জমিতে পার্কটি স্থাপন করা হয়। ইকোপার্কটিতে রয়েছে কৃত্রিম ঝরণা আর পাহাড়ের নিদর্শন। নদীর তীরঘেঁষে একটি রাস্তা রয়েছে এবং রয়েছে পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি ওয়াচ টাওয়ার। পার্কটির অভ্যন্তরে একটি হ্রদ এবং হ্রদের উপর দুটি কাঠের সেতু আছে। পার্কটিতে বাগান, দোলনাসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]রাজধানী ঢাকা থেকে পিরোজপুর সদরের দূরত্ব সড়ক পথে ১৮৫ কিলোমিটার ও জলপথে ২৫৯ কিলোমিটার; আর বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে ৫০ কিলোমিটার। এই জেলাটি একটি উপকূলীয় ও নদীবহুল অঞ্চল হওয়ায় এখানকার যেকোনো স্থানে আসার জন্য নৌপথ সবচেয়ে সুবিধাজনক পরিবহন ব্যবস্থা। তবে, সড়ক পথেও এখানে আসা সম্ভব; সেক্ষেত্রে ফেরী পারাপার হতে হবে। পিরোজপুরে রেল যোগাযোগ বা বিমান বন্দর নেই বলে এই দুটি মাধ্যমে এখানকার কোনো স্থানে আসা যায় না।
সড়কপথে ঢাকা থেকে পিরোজপুর যাওয়ার পথে মাঝপথে বৃহত্তর পদ্মা নদীর অবস্থান হওয়ার কারণে ঢাকা থেকে সরাসরি পিরোজপুরের কোনো বাস যোগাযোগ নেই। ফেরি পারাপার সার্ভিসের পাশাপাশি লঞ্চ বা স্পিডবোটের মাধ্যমে নদী পার হয়ে পিরোজপুর যাওয়া যায়। ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-পিরোজপুর রুটের ফেরি পারাপার গাড়ি রয়েছে। সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো মাওয়া সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর যাতায়াত করে। আর গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো পাটুরিয়া সংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে পিরোজপুর রুটে চলাচল করে।
ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন একাধিক যাত্রীবাহী লঞ্চ পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সড়কপথের তুলনায় নদীপথে লঞ্চে যাতায়াত আরামদায়ক। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:০০ টা থেকে শুরু করে রাত ৮:৩০ টা পর্যন্ত লঞ্চগুলো ছেড়ে যায় এবং পরদিন সকাল ৮:০০ টা থেকে ১০:০০ টার মধ্যে পিরোজপুর গিয়ে পৌছায়। পিরোজপুর হুলারহাট নামক ঘাটে নেমে ঘাট থেকে রিক্সা (ভাড়া ৩০-৫০ টাকা), ভ্যান (ভাড়া ২০-৩০ টাকা) ও টেম্পুযোগে (ভাড়া ২০-৩০ টাকা) পিরোজপুর শহরে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ব্যক্তিমালিকানাধীন লঞ্চের পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ-র রকেটও ঢাকা-পিরোজপুর রুটে চলাচল করে। লঞ্চের তুলনায় রকেটে যাতায়াত কিছুটা আরামদায়ক। সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত সপ্তাহের ৫ দিন রকেট চলাচল করে। রকেটগুলো প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬:৩০টায় সদরঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে পরদিন সকাল ৮:০০টা থেকে ১০:০০টার মধ্যে পিরোজপুরের হুলারহাট ঘাটে গিয়ে পৌছায়।
কী দেখবেন
[সম্পাদনা]ইকোপার্কটিতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখ-পাখালি ও ছোট জীবজন্তু রয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে অবসর বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরণের খেলা ও ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা।
ঘুরে দেখুন
[সম্পাদনা]নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে বেড়াতে পারেন; এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো -
- পিরোজপুরের প্রাচীন মসজিদ;
- গোপালকৃষ্ণ টাউন ক্লাব;
- শেরে বাংলা পাবলিক লাইব্রেরী;
- বলেশ্বর ঘাট শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ।
কোথায় থাকবেন
[সম্পাদনা]আবাসিক হোটেল
ক্র.নং | নাম ও ঠিকানা | তারকামান | যোগাযোগ |
---|---|---|---|
১ | হোটেল রজনী, ক্লাব রোড়, পিরোজপুর | এক তারকা | ০১৭১২৫৬২২৪১ |
২ | হোটেল রিল্যাক্স, হাসপাতাল রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৮০৭ |
৩ | হোটেল ডালাস, থানা রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৮৫৫ |
৪ | হোটেল বলাকা, ব্রীজ রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৭১০ |
৫ | হোটেল অবকাশ, থানা রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৩৩৩ |
৬ | হোটেল বিলাস, ক্লাব রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৫৯৪ |
৭ | হোটেল রয়্যাল, কলেজ রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০১৭১২৯৪৪৩৩৫ |
৮ | হোটেল ছায়ানীড়, বাজার রোড, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬২৩৮১ |
৯ | হোটেল সিনথিয়া, কাপুড়িয়া পট্টি, পিরোজপুর | এক তারকা | ০৪৬১-৬৩২৬২ |
১০ | হোটেল আল মদীনা, ইন্দেরহাট বন্দর, নেছারাবাদ | এক তারকা | ০১৭১২৫১৯০০৯ |
সতর্কতা
[সম্পাদনা]যেকোনো সমস্যায় যোগাযোগ করতে পারেন -
- ওসি, পিরোজপুর সদরঃ মোবাইল: ০১৭১৩-৩৭৪ ৩৩৬।