মংপু


মংপু হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পাহাড়ি জেলা দার্জিলিঙের একটা পর্যটন কেন্দ্র। এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত মংপু নিসর্গ পাহাড়ি সৌন্দর্যে সত্যিই অনন্য। এই বিষয়টা মংপুর 'রবীন্দ্র ভবন' সফরকারী ব্যক্তিমাত্রই উপলব্ধি করতে পারবেন। মংপুর পাহাড়ঘেরা রবীন্দ্র ভবন পর্যটকদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। দার্জিলিং থেকে ঘুম পাহাড় হয়ে তিস্তা বাজার, কিংবা বলা ভালো, কালিম্পং যাওয়ার পথে 'সাড়ে ছ-মাইল' গ্রাম থেকে ক্রমশ নিচের দিকে নামতে নামতে সতেরো কিলোমিটার দক্ষিণে হল মংপু। রবীন্দ্রনাথ যখন কলকাতা থেকে মংপু যেতেন, প্রথম দিকে ওই সতেরো কিলোমিটার রাস্তা পাকা ছিলনা। সেই সময় তিনি এক পালকিতে সওয়ারি হয়ে সাড়ে ছ-মাইল থেকে মংপু যেতেন। সেই পালকিটা বর্তমানে রবীন্দ্র ভবনে রক্ষিত আছে। পরে অবশ্য রাস্তা পাকা হয়েছে এবং তখনকার সেই পালকি বাহকদের একজনের উত্তরসূরিই এখন রবীন্দ্র ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ করেন। সেই ব্যক্তিই আবার পর্যটকদের গাইডের কাজ করে দেন। বাংলা, নেপালি, হিন্দি এবং কিছুটা ইংরেজিতেও কথা বলতে পারেন। রবীন্দ্র ভবনে কবির মংপুবাসের সময়কার পাণ্ডুলিপি, চেয়ার, টেবিল এবং ছবি আঁকার সরঞ্জাম সযত্নে রক্ষিত আছে। রবীন্দ্র অনুরাগী অসংখ্য পর্যটক মংপু রবীন্দ্র ভবনে ভিড় জমান। পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র মংপুতেই সিংকোনা চাষ হয়। সিংকোনা থেকে ম্যালেরিয়ার ওষুধ কুইনাইন তৈরি হয়। সিংকোনা প্রসেসিংয়ের কারখানা আছে মংপুতে। রবীন্দ্র ভবনের পাশেই শ্রমিক ভবন। রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতিপ্রেমের নিদর্শন মংপুতে পাওয়া যায়।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]- দার্জিলিং অথবা ঘুম স্টেশন থেকে মিনিবাস কিংবা চারচাকা ভাড়া গাড়িতে সাড়ে ছ-মাইল হয়ে মংপু।
- কলকাতা থেকে নিজের গাড়িতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং হিল কার্ট রোড দিয়ে ঘুম পাহাড়, সাড়ে ছ-মাইল হয়ে মংপু।
- কলকাতা থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি। ওখান থেকে মিনি বাস কিংবা ছোটো গাড়িতে ঘুম স্টেশন। ঘুম থেকে ছোটো চারচাকা ভাড়া গাড়িতে মংপু।
কোথায় থাকবেন?
[সম্পাদনা]- ঘুম পাহাড়ের জোড়বাংলায় ছোটো থাকার হোটেল আছে।
- দার্জিলিঙে রাত্রিযাপন করার অনেক হোটেল আছে।
দেখুন
[সম্পাদনা]- 1 রবীন্দ্র সংগ্রহশালা। এটি পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং শহরের কাছে মংপুতে অবস্থিত একটি জাদুঘর। সিঙ্কোনা-বিশারদ ড. মনোমোহন সেনের স্ত্রী তথা বিশিষ্ট কবি ও ঔপন্যাসিক মৈত্রেয়ী দেবীর নিমন্ত্রণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে কিছুদিন এই বাড়িটিতে অবস্থান করেছিলেন।
কী খাবেন?
[সম্পাদনা]- রবীন্দ্র ভবনের কাছাকাছি মোটর স্ট্যান্ড এবং বাজারে রেস্তোরাঁয় পরোটা, চাউমিন, মোমো, থুকপা, ভাত, মাছ, মাংস, ইত্যাদি সবই পাওয়া যায়।