মেলখুম ট্রেইল চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত একটি গিরিপথ

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

মেল একপ্রকার লতা, যা মাছের চেতনানাশক হিসাবে কাজ করে। স্থানীয়রা একসময় মাছ শিকারের জন্য কুমের পানিতে মেল লতার রস ছিটিয়ে দিত। রস ছিটানোর কিছুক্ষণ পর কুমের পানিতে থাকা মাছ (বিশেষ করে চিংড়ি) মরে ভেসে উঠত। এভাবে মাছ শিকার করতে করতে একসময় এই অঞ্চলের নাম হয়ে উঠে মেলকুম বা মেলখুম।[][]

অবস্থান

[সম্পাদনা]

মেলখুম ট্রেইল চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় এলাকায় অবস্থিত।[][]

বর্ণনা

[সম্পাদনা]

মেলখুমের প্রবেশপথের দুই পাশে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ ফুট খাড়া উঁচু পাহাড় আড়াআড়িভাবে দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের মাঝখানে রয়েছে সরু পিচ্ছিলপথ। চলার পথটি খুব সরু হওয়ায় ভিতরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে দিনের বেলায়ও কূপটি ঘন অন্ধকার হয়ে থাকে। এছাড়া, কূপের কিছু কিছু জায়গায় গভীরতা খুব বেশি হওয়ায় এটি ভয়ানক দেখায়।[][][]

কীভাবে যাবেন?

[সম্পাদনা]

ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম শহর থেকে বাস বা ট্রেনে করে সোনাপাহাড়ের নাহার এগ্রো আসতে হবে। সেখান থেকে পূর্বদিকের রাস্তা ধরে ৫ মিনিট হাঁটলে রেললাইন পাওয়া যাবে। রেললাইন পার হওয়ার পর মাটির রাস্তা ধরে ১৫-২০ মিনিট হাঁটলে একটি কালভার্ট দেখা যাবে। কালভার্টের ডানদিকে একটি পাথরবিহীন সরু ছড়া রয়েছে। ছড়া হতে উজানের দিকে ৪৫-৫০ মিনিট হাঁটলে মেলখুম ট্রেইল দেখা যাবে।[]

সতর্কতা

[সম্পাদনা]

সাঁতার না জানলে ও শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকলে মেলখুমে না যাওয়া উচিত। কারণ খুমের পানি অনেক ঠান্ডা। এছাড়া, জায়গাটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত নয়।

নিষেধাজ্ঞা

[সম্পাদনা]

২০২৩ সালের ১৪ মার্চ ও ২৪ এপ্রিল মেলখুমে ঘুরতে এসে ১৩ জন পর্যটক আটকা পড়ে। পরে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহেদ হোসেন বলেন, "মেলকুম গিরিখাতটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় দিনের আলো কমে গেলেই পর্যটকেরা দিক ভুল করেন। অভিজ্ঞ গাইড ছাড়া এ স্থানে না যেতে পর্যটকদের অনুরোধ করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা রোধে বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।"[] এরই মধ্যে বনবিভাগ কর্তৃক মেলখুমের বিভিন্ন প্রবেশপথে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ও সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।[][]

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইলে"জাগো নিউজ। ১২ মার্চ ২০২৩। ২৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  2. "ঘুরে আসুন মেলখুম ট্রেইল"দৈনিক সমকাল। ১৮ জুলাই ২০২৩। ২৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  3. "মিরসরাইয়ের মেলখুম ট্রেইলে পর্যটক নিষিদ্ধ হলো"নয়া দিগন্ত। ১০ জুন ২০২৩। ১০ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  4. "The Trail of Excitement"ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ জুন ২০২৩। ২৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  5. "ছুটেছে মন মেলকুম"দৈনিক আজকের পত্রিকা। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। ২৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  6. "ঝরনা ও গিরিখাত দেখতে মিরসরাই এসে কেন পথ হারাচ্ছেন পর্যটকেরা"প্রথম আলো। ৩০ এপ্রিল ২০২৩। ২৬ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  7. "মিরসরাইয়ের মেলকুম গিরিপথে প্রবেশ নিষিদ্ধে বনবিভাগের নানা কর্মসূচি"যায়যায়দিন। ১৬ মে ২০২৩। ২৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০২৩