শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধি
শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধি ভবন
সাধারণ তথ্যাবলী
অবস্থানসোনামসজিদ
ঠিকানাশিবগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
শহরচাঁপাইনবাবগঞ্জ
দেশবাংলাদেশ
স্বত্বাধিকারীবাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর
কারিগরি বিবরণ
তলার সংখ্যা
পরিচিতিশাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধি ভবন
অন্যান্য তথ্য
কক্ষসংখ্যা

শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধি মুঘল যুগের সর্বপ্রথম সমাধি স্থাপত্য নিদর্শন বলে বিবেচনা করা হয়। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।[]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালী দীর্ঘদিন তৎকালীন গৌড়ে সুনামের সঙ্গে ইসলাম প্রচার করে ফিরোজপুরেই ১০৭৫ হিজরী (১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দে) মতান্তরে ১০৮০ হিজরীতে (১৬৬৯ খ্রিষ্টাব্দে) সমাধিস্থ হন।[]

অবকাঠামো

[সম্পাদনা]

শাহ নেয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর সমাধি উঁচু ভিটের ‍উপর দণ্ডায়মান এ সমাধিটি বর্গাকৃতির এক গম্বুজ বিশিষ্ট ইমারত। ইট-সুরকির নির্মিত এ সমাধি একটি অনুষ্ঠান মঞ্চের উপর নির্মিত। যার ভূমি পরিকল্পনা প্রায় ১৪.৯৩ মিটার বর্গাকার। সমাধি ভবন এর প্রত্যেক দিকে ৪৯ ফুট দৈর্ঘ্য প্রস্থ এবং মধ্য প্রকোষ্ঠটি সাড়ে ২১ ফুট বর্গ।

ইমারতটির প্রতিটি পাশে তিনটি করে খিলান-দরজা রয়েছে এবং প্রতিটি কোণে একটি করে সংলগ্ন বুরুজ নির্মিত হয়েছে, যেগুলো আনুভূমিক আলিসার কিছুটা উপরে উঠে ক্ষুদ্র গম্বুজে সমাপ্ত হয়েছে। মূল ছাদটি আধাগম্বুজাকৃতির এবং এর চূড়ায় একটি কলসদণ্ড স্থাপন করা হয়েছে, যার নিচে একটি আটকোণাকার ঘাড় বিদ্যমান। প্রত্যেক দেয়ালে তিনটি করে প্রবেশ পথ সন্নিবেশিত হওয়াতে এ মাজার শরীফকে বারদুয়ারী বলা হয়। খিলানগুলো চারকেন্দ্রিক এবং কোণাকৃতি, এবং সমগ্র দেয়ালে চুনসুরকি ও চুনকাম ব্যবহার করা হয়েছে।[] মূল কক্ষের চারদিকে ঘিরে রয়েছে টানা ভর্টেড বারান্দা। মূল মাজার কক্ষের চর্তুদিকে একটি দরজা বিদ্যমান। সমস্ত দরজা গুলি খিলানযুক্ত মূল কক্ষের ওয়াল ভোল্ট গম্বুজ এর ভার বহন করে।[]

সমাধির অভ্যন্তরে একটি ৬.৫৫ মিটার বর্গাকার কেন্দ্রীয় কক্ষ রয়েছে। এই কক্ষের চার কোণে চারটি বর্গাকার কক্ষ এবং প্রতিটি দুটি কোঠার মাঝে একটি করে দীর্ঘ কক্ষ অবস্থিত। কোণার কক্ষগুলোর ছাদ সমতল, অন্যগুলোর ছাদ আধানাকৃতি। মূল কেন্দ্রীয় কক্ষের মধ্যেই হযরত শাহ সুফি নিয়ামত উল্লাহ ওয়ালীর কবর অবস্থিত।

সমাধিস্থলে পাওয়া দুটি শিলালিপির মধ্যে একটি তোঘরা ও অপরটি নাসখ ও নাস্তালিক লিপিতে উৎকীর্ণ। যদিও এই শিলালিপিতে শুধুমাত্র কোরআনের বাণী খচিত রয়েছে, তবে তা স্থাপনাটির ধর্মীয় গুরুত্ব ও ঐতিহাসিক মূল্য নির্দেশ করে।

অবস্থান

[সম্পাদনা]

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরত্বে অবস্থিত শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী তোহাখানা কমপ্লেক্স এর অভ্যান্তরে শাহ নেয়ামতউল্লাহ এর তিন গম্বুজ মসজিদের উত্তরে শাহ নেয়ামতউল্লাহ এর মাজার অবস্থিত।

ব্যবহার

[সম্পাদনা]

মূলত এটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধি ভবন। সমাধি ভবনটি মাজার হিসেবে এখনো সচল আছে।

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "রাজশাহী বিভাগের পুরাকীতি - Department of Archaeology-Government of the People's Republic of Bangladesh - প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"। সংগ্রহের তারিখ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  2. সালাউদ্দিন, মোহাম্মদ (২৬ মার্চ ২০১০ইং)। "শাহ নিয়ামতুল্লাহ এর মাজার"। গৌড়বঙ্গ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর প্রাচীন নিদর্শন (2 সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: জাতীয় সাহিত্য পরিষদ। পৃ. ১০১। {{বই উদ্ধৃতি}}: |তারিখ= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)
  3. "সোনামসজিদ তোহাখানা মাজার শরিফ"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. চক্রবর্তী, রজনীকান্ত (জানুয়ারি ১৯৯৯)। গৌড়ের ইতিহাস (PDF) (1 & 2 সংস্করণ)। Bankim Chatterjee Street, Calcutta 700 073: Dev's Publishing।{{বই উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অবস্থান (লিঙ্ক)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]